বৃদ্ধাশ্রমে অসহায় মায়েদের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা

ঘর্মাক্ত দুপুর। প্রচণ্ড রোদ। এ সময় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অরাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবী ও জনকল্যাণমূলক সংগঠনের একঝাঁক সদস্য রওনা দিলেন বৃদ্ধাশ্রমে অবহেলিত মায়েদের আর্তনাদ শুনতে এবং ভালোবাসা পেতে। রান্না করা হলো খাবার। তাঁদের সঙ্গে খেলাধুলা ও আনন্দঘন সময় কাটানোর পর সবশেষে মায়েদের নিয়ে খাওয়াদাওয়া করা হলো। বলছিলাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের তারুণ্যের ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনের কথা।

২৯ জুলাই কুষ্টিয়া শহরে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ‘উদয় মা ও শিশু পুনর্বাসনকেন্দ্রে’ দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কুষ্টিয়া শহরের সার্কিট হাউসে সকালে বৃদ্ধ মায়েদের সঙ্গে নিয়ে কেক কাটার মধ্য দিয়ে এ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী শুরু। এবারের বার্ষিকী ছিল ১৩তম। প্রতিবারের চেয়ে এবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীটি ব্যতিক্রমভাবে পালন করে সংগঠনটি।

সেখানে তারুণ্যর সদস্যরা সকাল থেকে বৃদ্ধাশ্রমের মায়েদের সঙ্গে খেলাধুলা করে, কেক কেটে আনন্দঘন সময় কাটান। তারুণ্যের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মারুফ হোসেনের সঞ্চালনায় ও সভাপতি আশিফা ইসরাত জুঁইয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তারুণ্যের উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. মাহবুবর রহমান, অধ্যাপক এ কে এম নাজমুল হুদা, উদয় মা ও শিশু পুনর্বাসনকেন্দ্রের পরিচালক আফরোজা ইসলাম মিষ্টি ও সভাপতি এম ইফতেখার হোসেন মিঠু, তারুণ্যের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ও তৃতীয় সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম রিপন, ষষ্ঠ সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম রিমন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন তারুণ্যের বিভিন্ন স্তরের সাবেক ও বর্তমান দায়িত্বশীল সদস্যরা।

এ সময় তারুণ্যের উপদেষ্টারা দীর্ঘ স্মৃতিচারণা করেন। তারুণ্যের দীর্ঘ ১৩ (তের) বছরের এই পথচলায় নানা কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন তাঁরা। সভাপতির বক্তব্যে আশিফা ইসরাত জুঁই এই ১৩ (তের) বছরের পথচলায় যাঁরা তারুণ্যকে এ পর্যায়ে নিয়ে আসতে সহযোগিতা করেছেন, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তারুণ্যের সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম বলেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে উপস্থিত তারুণ্যের সদস্যদের বাবা-মায়ের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে উপলব্ধি আসবে।

তারুণ্য একটি স্বেচ্ছাসেবী ও জনকল্যাণমূলক সংগঠন, যা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত। ‘অবারিত সম্ভাবনা নিয়ে জাগ্রত তারুণ্য’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ২০০৯ সালের ২৯ জুলাই যাত্রা শুরু করে সংগঠনটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বুকে হাঁটিহাঁটি পা পা করে দীর্ঘ ১৩ বছরের পথচলা শেষে ১৪ বছরে পদার্পণ করল।

বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগানো, তরুণদের স্বেচ্ছাসেবী মনোভাবসম্পন্ন করে গড়ে তোলা, নেতৃত্ব দক্ষতা তৈরি, সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ, শিল্প ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ গঠনে বইপাঠ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় অংশগ্রহণ, বনায়ন, রক্তদান, শীতবস্ত্র বিতরণ ও অসহায় শিক্ষার্থীদের সহযোগিতাসহ নানাবিধ সামাজিক কাজ করে যাচ্ছে তারুণ্য।

লেখক: রানা আহম্মেদ অভি, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়