ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে তরুণ জান্নাতুলের ভিন্ন উদ্যোগ
অসহায়-দরিদ্র-ছিন্নমূল মানুষের জন্য সব সময়ই কিছু না কিছু করতে উদ্গ্রীব তরুণ জান্নাতুল ফেরদৌস। এই যেমন গত পবিত্র ঈদুল আজহার সময় তিনি কোরবানির মাংস দিয়ে বিরিয়ানি রান্না করে দুই শতাধিক অসহায়-দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিতরণ করেছেন। সঙ্গে দিয়েছিলেন পায়েস।
জান্নাতুল একটি বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। তিনি বলেন, অসহায়-দরিদ্র মানুষের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতেই এ উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। তাঁর এ কাজে কিছু হৃদয়বান মানুষ সহায়তা করেন।
শিক্ষার্থীজীবন থেকেই সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করে আসছেন জান্নাতুল। বিশেষ করে এতিম, ছিন্নমূল শিশুদের জন্য কাজ করে আসছেন তিনি। প্রায় সাত বছর ধরে সামাজিক সেবামূলক কাজে জড়িত তিনি। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও হয়েছে।
জান্নাতুল শুরুতে বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন। পরে নিজ উদ্যোগে এ কাজ শুরু করেন।
২০১৮ সালে রাজধানীর মিরপুরের একটা বস্তি ভয়াবহ আগুনে পুড়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে জরুরি ত্রাণসহায়তা দেন জান্নাতুল ও তাঁর দল। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাসামগ্রীর ব্যবস্থা করেন। এভাবে বিভিন্ন দুর্যোগে বস্তিতে সহায়তা নিয়ে ছুটে গিয়েছিলেন জান্নাতুল।
২০২০ সালে দেশে করোনা হানা দিলে ‘বিধিনিষেধ’দেওয়া হয়। এতে বিপদে পড়েন দরিদ্র মানুষ। এ সময় খাদ্যসামগ্রী, খাবার বিতরণসহ নানাভাবে তাঁদের পাশে দাঁড়ান জান্নাতুল। এ ছাড়া তিনি মানুষের মধ্যে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ করেন।
রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা জান্নাতুল অসহায়-দরিদ্র শিশুদের জন্য বিশেষভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ২০২১ থেকে মিরপুরের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে শিশুদের বিভিন্নভাবে সহায়তা দিচ্ছেন। তাঁর সহায়তার মধ্যে রয়েছে—বাজার, খাদ্য, শিক্ষাসামগ্রী, পোশাক বিতরণ।
মিরপুরের আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও আরও কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে বিভিন্নভাবে সহায়তা করছেন জান্নাতুল। তিনি বলেন, এই অসহায় শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গঠনে সহায়তা করাই তাঁর মূল উদ্দেশ্য।
জান্নাতুল জানান, অসহায় মানুষদের সহায়তায় কাজ করতে গিয়ে তাঁকে নানা সময় প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। তবে তিনি দমে যাননি। তাঁর মা তাঁকে এই কাজ করতে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। পরিবারসহ সবার সহযোগিতায় জান্নাতুল তাঁর সমাজসেবামূলক কাজ অব্যাহত রাখতে চান।