শীত মানেই ঘাস ভেজা শিশিরে

শীতকাল আমাদের দেশের বাকি ঋতুগুলোর তুলনায় খুব উল্লেখযোগ্য একটি ঋতু। ঋতুর পালাবদলের হাওয়া নিয়ে প্রতিবছর আমাদের সামনে হাজির হয় তার আগমনী বার্তা নিয়ে। শীতকালে চারদিক রুক্ষ হয়ে ওঠে, বাতাসে শীতের আমেজ লাগে। তীব্র ঠান্ডায় সবার জনজীবন বিপন্ন হয়ে ওঠে। কিন্তু এত অসুবিধার পরও শীতকাল অনেকের জীবনে আনন্দ বয়ে নিয়ে আসে। আবার অনেকের দুর্বিষহ কষ্ট।

শীতকালে কৃষকেরা ধান তুলে নিয়ে আসেন তাঁদের ঘরে। নবান্ন উৎসব শুরু হয় প্রত্যেক কৃষকের বাড়িতে। চারদিকে খেজুরের রস এবং নতুন নতুন পিঠাপুলির ধুম লেগে যায়। শীতকালের এসব বিশেষত্বের কারণে শীতকাল অন্য সব ঋতু থেকে আলাদা। শীতকালের আগমনী বার্তা নিয়ে কত মনীষী যে হরেক রকম উক্তি রচনা করেছেন, তার হিসাব জানা নেই।

আমাদের ষড়ঋতুর দেশে হেমন্ত মানেই শীতের আগমনী বার্তা। চায়ের পাতায় কিংবা লাউয়ের ডগায় শিশির ও কুয়াশা জানান দিচ্ছে, শীত আসছে। বড় শহর বা মহানগরীর দালানকোঠায় শীতের পরশ পড়তে একটু দেরি হলেও গ্রামাঞ্চলে এরই মধ্যে দেখা মিলছে কুয়াশার। শুরু হয়েছে এখানকার প্রকৃতিতে হিম হিম হাওয়া। সূর্যোদয়ের আগে দেখা যায় ঘাস ভেজা শিশিরে।

শীতের সময় প্রথমেই চোখে পড়বে পোশাকের পরিবর্তন। এ সময় গ্রীষ্মের হাঁপছাড়া দিনের মতো কাউকে টি-শার্ট পরে ঘুরতে দেখা যায় না। ছেলে–মেয়েনির্বিশেষে সবার পরনে দেখা যায় বাহারি রঙের সোয়েটার, ব্লেজার কিংবা জ্যাকেট।

শিশিরভেজা ঘাস, ভোরে ও সন্ধ্যায় কুয়াশার চাদরে ঢাকা প্রকৃতি। শীতের আগাম সবজির খেতে কৃষকের ব্যস্ততা। আলমিরায় বন্দী থাকা গরম কাপড়গুলো আলনায় স্থান দেওয়াসহ আরও কত কী। গ্রামবাংলার সরল-সাদামাটা মানুষেরা বলছে, অপ্রাপ্তি আর দুঃখবেদনা যতই থাকুক, হেমন্ত এলে প্রকৃতির মতোই তাদের জীবনেও নেমে আসে এক শীতলতা, এ যেন এক অন্য রকম অনুভূতি তৈরি করে হৃদয়ে।
*লেখক: মো ফাহাদ বিন সাঈদ, ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়