বর্ষবরণে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে প্রস্তুতি

আসছে বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখ। নতুন বছরকে বরণ করে নিতে দেশজুড়ে বিভিন্ন প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। করোনায় দুই বছর বিরতির পর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীর আয়োজন হতে যাচ্ছে পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন। এ উপলক্ষে চারুকলা বিভাগে বাংলা নতুন বছর আসার সাত দিন আগে থেকে চলছে বর্ষবরণের নানা প্রস্তুতি।

চারুকলা বিভাগে দেখা যায়, পয়লা বৈশাখের প্রস্তুতিতে সেখানকার শতাধিক শিক্ষার্থী ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ষবরণের অন্যতম অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা ১৪ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু। থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বৈশাখী পালার আয়োজন। এর আগের সন্ধ্যায় চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে দেশের মঙ্গল কামনায় ফানুস উৎসব করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ষবরণের এবারের প্রতিপাদ্য ‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা, অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।’

‘এসব আয়োজনের মাধ্যমে আমরা প্রকাশ করি আমরা অসাম্প্রদায়িক, আমরা মৌলবাদী চেতনাকে ধারণ করি না, আমরা সামাজিক ও মানবিক।’
সহযোগী অধ্যাপক সিদ্ধার্থ দে, পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন কমিটির সদস্যসচিব চারুকলা বিভাগের সহযোগী

এবারও মঙ্গল শোভাযাত্রায় আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের নানা অনুষঙ্গের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন সবাই। লোকজ সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দিয়ে রিকশা ও টেপাপুতুল, রাজা-রানি ও সূর্যের পেপার ম্যাশ, হাতি, বাঘ ও পেঁচার মুখোশ, আমন্ত্রণ পত্র বানাচ্ছেন তাঁরা। এসব কাজে ভালো লাগার বহিঃপ্রকাশ আর আবেগ প্রকাশ পাচ্ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

চারুকলার শিক্ষার্থী নিলয় দেবনাথ বলেন, ‘করোনা মহামারির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন বন্ধ ছিল। দুই বছর পর আবারও আমরা মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করছি সব গ্লানি, সব অন্ধকার মুছে যাক—এই প্রত্যাশায়। আমরা চারুকলা অনুষদের শতাধিক শিক্ষার্থী সম্মিলিতভাবে আয়োজনকে সফল করতে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছি।’

আরেক শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান রবিন বলেন, ‘বাংলা বর্ষবরণ উৎসব আমাদের প্রাণের উৎসব। এটা কোনো নির্দিষ্ট ধর্ম বা গোষ্ঠীর উৎসব নয়। সব ধর্ম, বর্ণ, পেশা ছাপিয়ে এটা আমাদের বাঙালির মহোৎসবে পরিণত হয়েছে। সবাই মিলে আমরা আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি করি আর এটা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ছড়িয়ে যাচ্ছে এবং এটা চলমান থাকবে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠায় বাংলা নববর্ষ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।’

পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন কমিটির সদস্যসচিব চারুকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সিদ্ধার্থ দে বলেন, ‘এসব আয়োজনের মাধ্যমে আমরা প্রকাশ করি আমরা অসাম্প্রদায়িক, আমরা মৌলবাদী চেতনাকে ধারণ করি না, আমরা সামাজিক ও মানবিক।’

লেখক: আশিকুর রহমান, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়