কোন পথে হাঁটবে নতুন প্রজন্ম আর কী হবে ভবিষ্যৎ

প্রতীকী ছবি: প্রথম আলো

উন্নয়নের মহাসড়ক আমরা শুনি, আসলেই বাস্তব হয়েছেও তাই; কিন্তু উন্নয়ন হয়নি এ দেশের সাধারণ মানুষের। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষ বেশি আর প্রথম ক্লাসের খুব কম, কিন্তু বর্তমান সময়টা চলছে প্রথম ক্লাসের ফ্যামিলির জন্য। রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক অবস্থান সবকিছু যেন আজ একটা নোংরা দুর্গন্ধ আসছে। সেই চিরচেনা নেই কোনো পথই, সবই আবর্জনায় ভরে গিয়েছে।

সরকার বরাদ্দ দেয় মানুষের জন্য, কাজ করার, কিন্তু সেই বরাদ্দ ঠিকই হয় জননেতাদের। জনপ্রতিনিধিদের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়, সাধারণ মানুষ ঠিকই আগের মতো রয়ে গেছে ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেশের সব সম্পত্তি হিসাব করে মাথাপিছু আয় হিসাব করি। যার আয় পাঁচ হাজার কোটি, আর যার আয় পাঁচ হাজার টাকা হিসাব করে দুইজনের সমান হয় মাথাপিছু অথচ ওই ব্যক্তি তো পাঁচ হাজার আয়ের ব্যক্তিকে সমান টাকা দেবে না। তাহলে মাথাপিছু আয় হিসাব করলে সরকারের জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের গল্প বলা যায় না। উন্নয়ন হয়, যার ছিল তার আরও হয়েছে এইটুকু রাঘববোয়ালদের জন্য সময়টা হয়েছে বেশ।

বর্তমান সময়ে যে অবস্থা মানুষ পারে না আত্মহত্যা করতে, বিধাতার নিয়মে ধরা। বাজার, চাকরি, আয়–বাণিজ্য খুবই করুণ অবস্থা, এ যেন এক দারিদ্র্যের জালে আটকে যাচ্ছে দেশটা। আমরা নতুন প্রজন্মের জন্য ভয়াবহ হুমকি, যারা মধ্যবিত্ত পরিবার ও নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান। সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

রাজনীতিবিদদের আর দেশপ্রেম নেই, প্রেম এখন টাকা। আগে দেশের মানুষের সেবার জন্য রাজনীতি করছে, এখন হয়েছে পেশা। নতুন প্রজন্মের জন্য এখন এই জায়গা আটকা, টাকা ছাড়া আপনি পদ–পদবি নিতে পারবেন না, আগে যোগ্যতার ভিত্তিতে মূল্যায়ন ছিল। যে ছাত্রসংগঠন ছিল এ দেশে মানুষের ক্রান্তিলগ্নের সারথি, দেশকে বিভিন্ন সংগ্রাম করে দেশপ্রেমের জন্য কাজ করছে, এখন সেখানেও হয় বাণিজ্য তদবির ও টেন্ডারবাজির কারখানা, যার টাকা আছে তার জন্য আরও ভালো করার সুযোগ রাজনীতি।

চাকরি এখন সোনার হরিণ। এখন সরকারি চাকরির নিয়োগ ছাড়লে দেখা যায় একটি কোটার জন্য ৪০০ পর্যন্ত আবেদন হয়, যে দেশে এত বেকার সে দেশে উন্নয়ন কীভাবে সম্ভব?

সরকারি চাকরির কোটাগুলো নিয়মিত লোক নেয় না, এ জন্য আরও সমস্যা। টাকা ছাড়া, তদবির ছাড়া চাকরি হয় না, এটাও বাংলাদেশ কী হবে আগামীর বাংলাদেশ, কী হবে লেখাপড়া করে এ দেশে? শিক্ষার বাণিজ্যও বেশ রমরমা দেশে সরকারি নির্ধারিত ফির চেয়ে অতিরিক্ত ফি নেয় প্রায় কলেজ–স্কুলগুলোতে, কিছু বলার নেই চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া।

গত ২৫ তারিখ বাজার করতে গিয়েছিলাম অনেক দিন পর। বাজারে দেখলাম যে মাছটার গত কয়েক মাস আগে ছিল ১৪০ কি ১৫০, সে মাছের দাম ৩০০। লবণের দাম কেজিতে বৃদ্ধি পেয়েছে ৫ টাকা, তেল তো কথাই নেই। চালের দাম তো বেশ চড়া।

কোনো কিছুই নয় আমাদের মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের জন্য তরুণ প্রজন্মে দেখছে বৈষম্য চিত্র। যে দেশে ধনীদের অবস্থান সে দেশে গরিব তো পিষ্ট হবে, এটাই স্বাভাবিক।

সরকার মহল থেকে বারবার বলা হচ্ছে উন্নয়নের জোয়ার। জোয়ার ঠিকই আছে আপনার, কিন্তু মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তরুণ প্রজন্মের জন্য কী হবে আগামীর বাংলাদেশ? কারা এ দেশ ভালো চায়? যারাই ক্ষমতায় আসে, তারাই এমন হয়। কার দোষ দেব?

*মো. কাওছার, শিক্ষার্থী, সরকারি বিএম কলেজ বরিশাল