১৬ পেরিয়ে ১৭-তে স্টামফোর্ডের সাংবাদিকতা বিভাগ

২০০৫ সালের ৮ এপ্রিল যাত্রা শুরু হয়েছিল স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের। সময়ের পরিক্রমায় সাফল্যের ১৬ বছর পেরিয়ে পা রাখল ১৭-তে।

সাংবাদিকতা, নিউজ প্রেজেন্টেশন, পাবলিক রিলেশনস, ফটোগ্রাফি, বিজ্ঞাপন, উন্নয়ন ও মিডিয়া গবেষণা, কমিউনিকেশন কিংবা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ইতিমধ্যেই সরব উপস্থিতির জানান দিয়েছেন এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। রাখছেন যোগ্যতার স্বাক্ষর।

স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যাললের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী আব্দুল মান্নান বলেন, ‘সাংবাদিকতা একটি চ্যালেঞ্জিং পেশা। এখানে প্রতিনিয়ত নিজেকে আপডেট রাখা জরুরি। আমরা, সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষকেরা প্রতিনিয়ত ছাত্রছাত্রীদের নতুন বিষয়গুলোর সঙ্গে পরিচিত করে থাকি, যাতে কর্মজীবনে তারা ভালো কিছু করে। সাংবাদিকতায় পড়াশোনার বিকল্প নেই। বিভিন্ন বিষয়ের বই পড়তে হবে।’

আর এই বিভাগ থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীরা দেশের গণমাধ্যম ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন জানিয়ে কাজী আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমাদের এই সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকবে। সাংবাদিকতায় কেউ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাইলে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় হতে পারে প্রথম চয়েস। সবাইকে স্বাগতম।’

সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যাললের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী গণমাধমে কাজ করছেন। ছাত্রছাত্রীদের অর্জনই আমাদের ডিপার্টমেন্টের অর্জন। শুধু পড়ালেখা নয়, আমাদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা নানা ক্ষেত্রে অবদান রাখছে। বিতর্কে আমাদের শিক্ষার্থীরা তিনবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, এটি আমাদের বড় পাওয়া।’

বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সামিয়া আসাদী বলেন, ‘সাংবাদিকতায় এখন থার্ড স্ক্রিন চলে আসছে। অর্থাৎ যেখানেই যাবেন, সবার হাতে মিডিয়া। সাংবাদিকতা এখন একমুখী নয়, দ্বিমুখী। রিপোর্ট দেওয়ার সাথে সাথে ফিডব্যাকও দিচ্ছে পাঠকেরা। সে ক্ষেত্রে সাংবাদিকতায় প্রস্তুতি ও পড়াশোনা করেই আসতে হবে।’

গ্রাম থেকে সাংবাদিক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ঢাকা এসেছিলেন সাইফুল মাসুম। স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হওয়ার মধ্য দিয়ে সেই স্বপ্নের ভিত্তি রচিত হয়েছিল তাঁর। দায়িত্ব পালন করেছেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে। দৈনিক আজকের পত্রিকার এই সাংবাদিক জানান, ‘এখানে স্বপ্নপূরণে সহায়ক বড় একটা পরিবার পেয়েছি। চার বছরের অনার্সে সাংবাদিকতা বিষয়ে অনেক জানার ও শেখার চেষ্টা করেছি। শিক্ষকেরা আমাদের জানার পরিধি অনেক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। পাঠ্যবইয়ের বাইরে সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সুযোগ হয়েছে। শিক্ষকদের সহযোগিতায় “স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক ফোরাম”–এর মতো সংগঠন গড়ার সুযোগ পেয়েছি।’

এই বিভাগের শেষ ট্রাইমিস্টারের শিক্ষার্থী কাশফিয়া আলম ঝিলিক, এখন ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করছেন টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরে। তিনি বলেন, ‘করতে করতে কাজ শেখা আর আগে শিখে এসে কাজ করার মধ্যে কিছুটা পার্থক্য তো অবশ্যই থাকে। সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়ে চাকরির ক্ষেত্রে কীভাবে তা কাজে লাগাব, তা সম্পূর্ণ নিজের ওপর নির্ভর করে। কারণ, সময়ের সাথে সাথে সব কিছুই বদলায় আর এই বদলের সাথে তাল মিলিয়ে সঠিক পথে চলতে পারলেই ভালো করা সম্ভব। তবে এখানকার শিক্ষক ও শিক্ষাব্যবস্থাকে আমি অভিজ্ঞ বলে ধরে নিতে পারি। এরপর চাকরির ক্ষেত্রটা বিবেচনা করলেও এখানের অনেক শিক্ষার্থীই বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছেন। শুধু সাংবাদিকতায়ই নয়, আরও অন্যান্য মাধ্যমেও তাঁদের দক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায়। সেদিক থেকে এই বিভাগ এগিয়ে।’

সাংবাদিকতা বিভাগে পড়ে সুবিধার কথা বলতে গিয়ে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি ও শিক্ষার্থী হাসান ওয়ালী বলেন, ‘এই বিভাগে পড়ে আমার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। সাংবাদিকতায় পড়ার সুবাদেই গণমাধ্যমগুলোতে সহজে লেখার সুযোগ পাচ্ছি। আমি এখন বাংলাভিশনের অনলাইনে কাজ করছি। এর আগে প্রথম আলোতে কন্ট্রিবিউটিং করেছি। এসব কিছুর পেছনে “সাংবাদিকতার শিক্ষার্থী”—এই পরিচয় মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। স্টামফোর্ডের আরেকটি ভালো বিষয় হচ্ছে, সংগঠনচর্চা। এটি একেবারে বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে হয়। যার মধ্য দিয়ে কর্মক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রথম শিক্ষা আমরা পাচ্ছি।’