সরকারি হাসপাতালে পুষ্টিবিদ নিয়োগ দেওয়া হোক

পুষ্টিবিদ, খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ যিনি। গবেষণায় জানা যায়, অধিকাংশ রোগই খাদ্য ও পুষ্টির সঙ্গে সম্পর্কিত। পরিমিত খাদ্য গ্রহণ না করা কিংবা ভেজাল খাদ্য গ্রহণের কারণে দেখা দেয় বিভিন্ন রোগবালাই। খাদ্য ও পুষ্টি সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষের নেই সঠিক জ্ঞান। এমনকি মানুষের মধ্যে খাদ্য ও পুষ্টি সম্পর্কে রয়েছে অনেক কুসংস্কার। এসবের সঙ্গে খাদ্যে ভেজাল অপুষ্টি সমস্যাকে আরও ত্বরান্বিত করছে। যার ফলে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও দেশে অপুষ্টিজনিত সমস্যাসহ নানা রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে।

খাদ্য ও পুষ্টির কথা ভাবলে প্রথমেই যে বিষয়টা মাথায় আসে, তা হলো ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। কথায় আছে, প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। আর দেহের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকলে কোনো ভাইরাস সহজে দেহে ঢুকতে পারে না। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায় খাদ্য। আবার সবার দেহে খাদ্যের চাহিদাও সমান নয়। মনে রাখতে হবে প্রয়োজনের চেয়ে কম খাদ্য গ্রহণ করলে সমস্যা, আবার বেশি খাদ্য গ্রহণ করলেও সমস্যা। তাই একজন মানুষের দেহের গঠন, ওজন, বয়স, পেশা ও লিঙ্গ বিবেচনা করে সঠিক খাদ্যের চাহিদা বলতে পারেন একমাত্র পুষ্টিবিদেরাই।

আমাদের দেশে পুষ্টিবিদের সেবা থেকে সর্বসাধারণ বঞ্চিত। পুষ্টিবিদদের জন্য নেই পর্যাপ্ত কাজের সুযোগ। দেশের প্রথম সারির কিছু বেসরকারি হাসপাতালে কিছুসংখ্যক পুষ্টিবিদ সেবা দিলেও তা অপর্যাপ্ত এবং সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। করোনা পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা বরাবরই দেহের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর তাগিদ দিচ্ছেন। টিকা না আসা পর্যন্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করাই করোনার একমাত্র পথ্য। এ জন্য প্রয়োজন মানুষের হাতের নাগালে পুষ্টিসেবা। অথচ দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোয় নেই কোনো পুষ্টিবিদ। ফলে সাধারণ মানুষ পুষ্টিসেবা গ্রহণের জন্য বিভিন্নজনের কাছে শরণাপন্ন হচ্ছেন, যাঁদের নেই পুষ্টি বিষয়ে কোনো ডিগ্রি। ফলে এসব রোগী রোগ থেকে ভালো হওয়ার বদলে নিজেদের বিপদ ডেকে আনছেন। স্বাস্থ্য খাতকে আরও শক্তিশালী এবং মানুষের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সরকারি হাসপাতালগুলোয় পুষ্টিবিদ নিয়োগের কোনো বিকল্প নেই।

*লেখক: শিক্ষার্থী, খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান অনুষদ (চতুর্থ বর্ষ), পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। [email protected]