ভ্রমণ...

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

এই তো সেই দিনের কথা, দেখতে দেখতে উনত্রিশ
বছর পার হয়ে গেল মনে হয়, হৃদয়ে স্পষ্ট

উত্তাল সমুদ্র, খুব ভোরের একফালি
রোদের আমেজ, নরম বালিশের কানেও
জলের গর্জন, নোনা হাওয়ার আস্বাদ,
নেশাগ্রস্ত সাদা ঢেউয়ের এলোমেলো ফেনা,
বালিতে নিশিত ঝিনুক পাথরকুচি
আর সোনালি কাঁকড়া, উন্মুক্ত আকাশ
সমুদ্রের আদিম অন্তহীন আহ্বান।

জোয়ার–ভাটা বুঝতে শিখেছি
সেই শৈশববেলার বিলীন বালিতে,
ঘর বানানো, আর ঘর ভাসা থেকে।
সমুদ্রপাড়ের মানুষ আকাশপানে তাকিয়ে,
ঢেউয়ের দিকে চেয়ে
আপনমনে আসতে আসতে বলে,
আরও তিন ঘণ্টা লাগত জোয়ারের
এখন পানিতে নাইব না।

কী আশা যায়, জোয়ার না ভাটায়
রাজর্ষি সমুদ্র সদাই বড় অহংকারী!
নাই তার কোনোই ভ্রুক্ষেপ, কে যায়,
কে আসে? পদচিহ্ন না–ই বা থাক—
এই তো গতবার ত্রিশ বছর আগে
এসেছিলাম দুজন দুজনার,
নাই সমুদ্রতটে কোনো পদচিহ্ন।

উনত্রিশে সমুদ্রতটে মাতিয়ে
ছিলাম চারজন, অর্থনীতিবিদ
ও তাঁর স্ত্রী, আর আমরা দুজন।
বালির ঝিনুক, সমুদ্র ঢেউয়ের ফেনার সাথে
মাতামাতি, ঘূর্ণিঝড়ে পুড়ে যাওয়া ঝাউগাছ
কালো মেঘ, ঝিরঝির বৃষ্টি, জ্যৈষ্ঠের উত্তাপ,
চারজনের জলে ভাসা, অফুরন্ত আনন্দ।
সমুদ্রতটে নাই কোনো পদচিহ্ন—

বহু বছর পার হলো, কত নগরীতে রেখেছি পা,
সময় চলেছে, বালির ঘরের মতো ভেসে ভেসে—
কোথাও কি আমরা হব আবার একসাথে—
জীবন কখনো ফিরে হয় না আর এক,
বন্ধু কাফি অর্থনীতি থেকে আর্সেনিক
বহু কাজে রেখেছে গভীর পদচিহ্ন।
সমুদ্রপাড়ের মানুষ শুধু বলে,
বন্ধু তুমি ঢেউয়ের মাঝে নাইব না
কালো মেঘ, ঝিরঝির বৃষ্টি, জ্যৈষ্ঠের উত্তাপ
সমুদ্রতটে নাই কোনো পদচিহ্ন।