ঈদে চাই সতেজ সচেতনতা

বাংলাদেশে ঈদের দিনে কোলাকুলি। প্রতীকী ছবি

ঈদ নিতান্তই একটি আবেগপ্রবণ শব্দ। ঈদ মানেই খুশি, ঈদ মানেই উল্লাস, ঈদ মানেই মোলাকাত, ঈদ মানেই সুখ ভাগাভাগি। এমন অসংখ্য বিশেষণ লুকিয়ে আছে শব্দটির অন্তরালে। তবে অদৃশ্য মরণঘাতি করোনা মহামারির কারণে গেল দুই বছর ধরে ঈদের আনন্দ–উল্লাস উপভোগ করতে পারেনি বিশ্ববাসী। দুই বছরে চারটি ঈদের আনন্দ ম্লান।

বিশ্বের এমন সংকটময় মুহূর্তে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা বিশেষ অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারছি, যা আমাদের সামনের দিনগুলোর জন্য দুর্যোগ পূর্বপরিকল্পনা করতে সাহায্য করবে বলে আমি মনে করি। প্রতিটি ঈদকে কেন্দ্র করে সবারই অনেক জল্পনাকল্পনা থাকে। ঈদের দিন কী করবে, কী পোশাক পড়বে, কোথায় কোথায় ঘুরতে যাবে, কী কী খাবার খাবে, এমন অনেক পরিকল্পনা থাকে সবারই। তবে এবারের ঈদে আমাদের স্বাস্থ্যসচেতন থাকতে হবে। অন্যান্য ঈদের মতো এবারও আমরা ঘোরাঘুরি কম করে পরিবারকে সময় দিতে হবে। এতে পরিবারের লোকজনও খুশি থাকবে, মহামারিকালীন স্বাস্থ্যঝুঁকি কম থাকবে।

ঈদ উপলক্ষে বর্তমান সময়ে হাটবাজার, রাস্তাঘাট, গণপরিবহন, শপিং মল, এমনকি হাসপাতালেও সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবাধে চলাফেরা করেছে জনসাধারণ। মহামারির এমন ভয়াল থাবার মধ্যে এভাবে অবাধে চলাফেরা আমাদের কোনোভাবেই ঠিক হচ্ছে না৷ আমরা নিজেরাই নিজেদের আরও ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন করছি। সামাজিক দূরত্ব, স্বাস্থ্যবিধি অমান্যকারী জরিমানার আয়তায় এনেও ঠিক রাখা যাচ্ছে না পথচারীদের। এর একমাত্র কারণ হলো আমরা ব্যক্তিগতভাবে সচেতন নই। ফলে এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হচ্ছে। আমরা যদি নিজ নিজ যায়গা থেকে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, তাহলে আর এত কিছুর প্রয়োজন হয় না। একটি বিষয় আমাদের মাথায় রাখা উচিত, এবারের ঈদে যদি আমি একটু কষ্ট করে সরকারি বিধিনিষেধগুলো মেনে চলি, বেঁচে থাকলে আগামীর সুস্থ স্বাভাবিক ঈদকে উপভোগ করতে পারব।

বৈশ্বিক মহামারি করোনা ইতিমধ্যে বিশ্ব থেকে ৪০ লাখের বেশি লোকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার। এ ছাড়া এ পর্যন্ত বিশ্বে ১৯ কোটির ওপরে আক্রান্তের সংখ্যা। এই আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। বিশেষ করে আমাদের বাংলাদেশে ইদানীং আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি বাড়ছে। তাই আমাদের এখনই সচেতন হতে হবে। এবারের ঈদুল আজহা আমরা বর্ণিলভাবে পালন করতে না পারলেও নিজেদের পারস্পরিকতার মাধ্যমে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পালন করব। অন্যান্য ঈদের মতো ঘুরতে বাইরে না গিয়ে করোনাকালীন এবারের ঈদটা নাহয় বাসাতেই কাটাব। এ ঈদে সবার প্রতি আহ্বান থাকবে, আমরা সবাই ব্যক্তিগতভাবে সচেতন হই। অযথা বাইরে ঘোরাঘুরি না করি এবং সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি। সচেতনতাকে সর্বত্র সতেজ করতে সজাগ হই সবাই।

লেখক: রিদুয়ান ইসলাম, শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা