ইতালিতে প্রাচীন সভ্যতার অনন্য নিদর্শন ‘পিসা টাওয়ার’

ছবি: লেখক

ইতালির টাস্কানি অঞ্চলের গৌরবময় প্রাচীন প্রসিদ্ধ এক নগরী পিসা। এই শহরেই ১৫৬৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেছিলেন জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানী গ্যালিলিও।

জগদ্বিখ্যাত হেলে যাওয়া বিশালাকৃতির হেলানো টাওয়ারও এ শহরে। শহরের রাস্তা ধরে এগোতে থাকলে অনেক দূর থেকেই চোখে পড়ে এই টাওয়ার। ইতালীয় ভাষায় Torre di Pisa অথবা Torre pendente di Pisa। পিসা শহরের ক্যাথিড্রাল স্কয়ারের তৃতীয় প্রাচীনতম স্থাপনা এই মিনার। পৃথিবীর আশ্চর্য স্থাপত্যের মধ্যে অনন্য এক স্থাপত্য হচ্ছে পিসার টাওয়ার, যা নিয়ে রয়েছে অপার বিস্ময়।

খ্রিষ্টপূর্ব ৬০০ শতাব্দীতে পিসা শহরের নামকরণ করা হয়। আর পিসা শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন হিসেবে এ টাওয়ারকে পিসার টাওয়ার বলা হয়। তবে দিন দিন এর ক্রমাগতভাবে একদিকে হেলে পড়ার ফলে এটির নাম পিসার হেলানো টাওয়ার হয়ে যায়।

ছবি: লেখক

প্রায় কয়েক শতাব্দী আগে মানুষের ভুল নির্মাণ কৌশলে তৈরি পিসার এই মিনারকে করে তুলেছে অনেক বেশি আকর্ষণীয়। পিসা মিনারে শিল্পীদের আঁকা বিভিন্ন ছবি ও কারুকার্যের সুন্দরভাবে হেলানো আকৃতি দেখলে যে কারও হৃদয় জুড়িয়ে যাবে।
ভূমি থেকে ৮ তলাবিশিষ্ট এ মিনারের উচ্চতা প্রায় ৫৬ মিটার, মোট ওজন প্রায় ১৪ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। বর্তমানে এটি হেলে রয়েছে প্রায় ৩ দশমিক ৯৯ ডিগ্রি কোণে। এর রয়েছে ২৯৪টি সিঁড়ি।

পিসার হেলানো টাওয়ারের নকশা কে করেছিলেন, তা নিয়ে একটু বিতর্ক থেকেই গেছে। ধারণা করা হয়, বোনানো পিসানো, গেরার্দো দি গেরার্দো, জিওভানিন পিসানো ও জিওভানিন দি সিমোনে এটির নকশা করেন। এর নির্মাণকাজ তত্ত্বাবধান করেন প্রকৌশলী টমাসো পিসানো।

ছবি: লেখক

১১৭৩ সালে কাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ১৩৭২ সালে। নির্মাণের প্রথম সময় থেকেই কাঠামোটি হেলে পড়তে শুরু করে। ১৯৯৯ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত এর ক্রমাগত হেলে পড়া রোধে কিছু কাজ করা হয়। নিয়মিত এর রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রকৌশলীদের ধারণা, পরবর্তী ২০০ বছর পর্যন্ত টাওয়ারটি আর হেলে পড়বে না।

ঐতিহ্যবাহী সেন্টরানিয়াইজ ইলুমিনেশন উত্সব উপলক্ষে প্রতিবছরেই চমৎকার ও দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জায় সাজানো হয় পিসা মিনারকে। পিসার এই হেলানো মিনারের সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন পর্যটনপ্রেমীরা।