ঈদ কবে হবে? এই প্রশ্ন মাথায় রেখেই আসলে ঈদের প্রস্তুতি শুরু হয়। কেউ রোজা এক দিন আগে শুরু করে, তো কেউ এক দিন পরে। কেউ রোজা চাঁদ দেখে শুরু করে, কেউ আরবি মাস অনুসরণ করে। ফলে আমাদের ঈদের উৎসব উদ্যাপন হয় বিভিন্ন দিনে। যেমন এবার কেউ কেউ ঈদ উদ্যাপন করবে মে মাসের ২ তারিখে, কেউ করবে মে মাসের ৩ তারিখে। ফলে সিডনিপ্রবাসীদের ঈদের উৎসব উদ্যাপনের যে বিষয়টা প্রথমেই সামনে আসে তা হচ্ছে ‘আপনি ঈদ কবে করছেন?’ বিষয়টা বেশ মজার। দুই দিনব্যাপী ঈদ উদ্যাপিত হওয়ায় ঈদের জামাতও দুই দিন অনুষ্ঠিত হয়। আকাশ ভালো থাকলে মানে আবহাওয়া যদি অনুকূলে থাকে, তাহলে পরিবার-পরিজনসহ সবাই ঈদগাহে নামাজ পড়তে যায়; আর আবহাওয়া বিরূপ হলে মসজিদেই ঈদের নামাজ আদায় করে। এখানে মেয়েরাও ঈদের জামাতে অংশ নেন।
সিডনির যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় সেটা হচ্ছে, সিডনির বাংলাদেশখ্যাত ল্যাকেম্বার ইফতারি মেলা। এই ইফতারি মেলা প্রতিবছর জাঁকজমকভাবে আয়োজন করা হয়। কেবল সিডনিতেই নয়, সারা অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশিদের কাছে ইফতারির মেলা ভীষণ জনপ্রিয়। ইফতারের সময় থেকে সাহ্রি পর্যন্ত এই মেলা সরগরম থাকে। বাংলাদেশি খাবারের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের খাবারের স্টল থাকে। উল্লেখ্য, এই আয়োজন অস্ট্রেলিয়া সরকারের বহুত্ববাদী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের একটি অংশ। এ ছাড়া বাংলাদেশি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে ঈদমেলা হয়ে থাকে।
ঈদে এখানে সরকারি ছুটি থাকে না। ফলে রমজান মাসের হিসাব অনুযায়ী ঈদ যে দিনেই হোক না কেন, ঈদ এখানে ছুটির দিনে মানে শনিবার বা রোববার উদ্যাপন করা হয়। প্রবাসে আমরা অনেকটা উদ্গ্রীব হয়ে থাকি কোনো একটি উপলক্ষের জন্য। তাই ঈদ যেকোনো দিনই হোক না কেন, তাতে আনন্দের বা উৎসব উদ্যাপনের কোনো হেরফের হয় না।
দেশে প্রিয় স্বজনদের জন্য, প্রিয় মানুষদের জন্য মন হাহাকার করে উঠলেও কিছুটা শূন্যতা অনুভব করলেও বন্ধুদের সঙ্গে মিলনের উচ্ছ্বাস, আড্ডা-হইচই সব মিলে ধর্ম-বর্ণ-মতনির্বিশেষে ঈদ এক অপার আনন্দের উৎসবে পরিণত হয়। ফলে ঈদ হয়ে ওঠে এক আন্তর্জাতিক উৎসব, যা চলতে থাকে মাসব্যাপী।
আমাদের এবার ঈদটা একটু অন্য রকম কাটবে। আমরা এবার ঈদ পালন করব অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস অঙ্গরাজ্যের আর্মিডেল শহরে, আমাদের এক ছোট বোনের পরিবারের সঙ্গে।