শ্বেতাঙ্গ অ-সভ্যতা

প্রকৃতির প্রতিশোধে, যখন আমরা বিবেকের আদলতে

ফের আরেকবার নির্মল হবার পাঠে ব্রত হলাম,

আর ঠিক তখন ক্ষমতার শ্বেতাঙ্গ উর্দিতে, চকচকে বুটে—

এক আল্পস ঊরুর গর্ব, ক্রমশ আট মিনিট ছেচল্লিশ সেকেন্ড

তোমার কালো গর্দানের ক্যারোটিড চেপে:

সভ্যতার লজ্জা-রক্ত-জীবন স্তব্ধ করে দিল।

ইয়েস, ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’— !

যে দাস প্রথায় তোমাদের পূর্বপুরুষের পেশির শ্রম,

কষ্টের ঘামে নির্মিত স্থাপনায় বর্ণবাদীরা দর্পিত;

ফের আরেকবার, সেই কংক্রিটের চাতালেই বৈষম্যের সাক্ষী:

তোমার নাসারন্ধ্র স্পর্শিত, চাপ-চাপ রক্ত— !!

জর্জ ফ্লয়েড, অদৃশ্য করোনাভাইরাস নয়,

বর্ণবিদ্বেষের চিরাচরিত সামাজিক ভাইরাস

তোমার বিশাল দেহের ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড-মস্তিষ্কের

সংযোগকে যখন হাঁটু দিয়ে পিষে

কি আশ্চর্য বেলুনের মতো ফটাস ফুটো করে দিল—

বিশ্বাস করো: তখন আমি, আমরা,

পৃথিবীর সব এক রঙে বিশ্বাসী মানুষেরাও

অস্থির হয়ে গেছি, একটু শ্বাস নেবার জন্য।

যেন ইতিহাস জীবন্ত হয়েছে আবার:

বর্ণবাদের হেনস্তার শিকার মার্টিন লুথার কিং, রোজা পার্কার;

মানবতার উত্তাল প্রোটেস্ট—থাকেনি ঘরে কেউ

মানেনি কারফিউ, আইন-আদেশ!

সাদা-কালো-বাদামি, ককেশিয়ান;

মিনেসোটা থেকে হিউস্টন, নিউইয়র্ক, সমগ্র আমেরিকা—

পৃথিবীর প্রতিটা মানুষের বিবেকের ক্যানভাসে

তোমার কালো চামড়ার, ভাসা চোখের কষ্ট—

জর্জ, কি নিদারুণভাবে ছুঁয়ে গেছে, দেখো।

ফ্লয়েড, জানি এ শ্বেতাঙ্গ অ-সভ্যতা হয়তো বদলাবে না;

সাদা দালানের কাঠামোয়, প্রকাশ্য রাস্তা-বিদ্যালয়ে;

বর্ণবাদ-হেনস্তা; সস্তা মজুরি; কলহ-বিবাদ-স্বাস্থ্যবিমা,

ক্ষুধা-পারিবারিক অনিশ্চয়তা, ঘৃণা—

হয়তো কখনোই বদলাবে না!

ডায়নামিক এ শহরে, কেবল কাউন্ট ডাউনের অপেক্ষা;

ক্যমোফ্লেজে আবারও কোন আততায়ী

চেপে ধরে ইতিহাসের টুঁটি: আর ততক্ষণ পর্যন্ত

ইথারের আত্মায় জর্জ ফ্লয়েডের দীর্ঘ-শ্বাস:

‘আই ক্যান্ট ব্রিথ! প্লিজ হেল্প মি!

মা-মা! আই ক্যান্ট ব্রিথ’!