মুক্তির পথে পা বাড়িয়ে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তোলন করা হয় বাংলাদেশের মানচিত্রখচিত লাল–সবুজ–সোনালি—এ তিন রঙের পতাকা। ২ মার্চ ১৯৭১
ছবি: রশীদ তালুকদার

স্বাধীনতা আসে স্লোগানে প্রকম্পিত
মুখরিত পথের মিছিলে,
স্বাধীনতা আসে বীরাঙ্গনা–শহীদদের
রক্তে ভেজা দেহের লালে।

স্বাধীনতা আসে সাতই মার্চের ভাষণে
অগ্নিস্ফুলিঙ্গসম,
দাবালন রূপে দাউ দাউ জ্বলছিল গ্রাম
যত শহর তিলোত্তমা।

স্বাধীনতা আসে বঙ্গবন্ধুর হৃদে
‘জয় বাংলা’ স্লোগানে,
স্বাধীনতা আসে বাংলার মানুষের মনে
সুখ-স্বপ্ন প্রত্যয়নে।

স্বাধীনতা আসে আপামর জনতার ঢলে
মুক্তিসেনার যোগাযোগে,
স্বাধীনতা আসে বঙ্গবন্ধুর ত্যাগে
সংগ্রামের উদ্যোগে।

স্বাধীনতা আসে বঞ্চিতদের বঞ্চনা,
ন্যায্য হিস্যা পেতে,
স্বাধীনতা আসে অকুতোভয় বীর সেনানী
ও প্রতিবাদী প্রাণেতে।

স্বাধীনতা আসে বাংলা ভাষায় যত কথা
আছে সব বলবার আশে,
স্বাধীনতা আসে প্রাণের প্রিয় দেশকে
রক্ষা করতে ভালোবেসে।

স্বাধীনতা আসে হাজার যুদ্ধশিশুর
গগনবিদারী কান্নাতে,
স্বাধীনতা আসে হাহুতাশ আর বিধবার
মর্মভেদী আর্তনাদে।

স্বাধীনতা আসে অযুত মুক্তিযোদ্ধার
নিদ্রাহীন প্রতিক্ষায়,
স্বাধীনতা আসে মা–মাটির বুকে শান্তির
নিশ্বাস ফেলার আশায়।

স্বাধীনতা আসে অনিয়মের বিরুদ্ধে
নিয়মতান্ত্রিক ভাষণে,
স্বাধীনতা আসে সংখ্যাগরিষ্ঠদের
ভোটাধিকারের আসনে।

স্বাধীনতা আনে সোনালি আঁশের মূল্যে
বৈদেশিক মুদ্রা লাভ,
স্বাধীনতা আনে সবুজে লাল মানচিত্রে
জয়ের নিশানে সয়লাব।

স্বাধীনতা আসে ভারী অস্ত্রশস্ত্র
বিপরীতে অসীম সাহসে,
স্বাধীনতা আসে ৩০ লাখ শহীদের
জীবনদানে সহাস্যে।

স্বাধীনতা আসে বধ্যভূমিতে জাতির
শ্রেষ্ঠ সন্তানের লাশে,
স্বাধীনতা আসে অর্ধমৃত শিশুটির
মৃত মায়ের বক্ষপাশে।

স্বাধীনতা আসে ‘এক নদী রক্ত পেরিয়ে’,
বঙ্গবন্ধুকে জড়িয়ে,
জাতীয় চার নেতা, অকুতোভয় দেশবাসী
মুক্তির পথে পা বাড়িয়ে।