পৃথিবী কি আবার কেঁপে উঠছে

কী হবে এবার? এত দিন তো আশায় আশায় বুক বেঁধে ছিলাম হয়তোবা বেঁচে গিয়েছি। কিন্তু এখন তো দেখছি মহাবিপদের মধ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। যতটুকু আশা ছিল, তাও যেন হারিয়ে যাচ্ছে। চারদিকে যেন হতাশা আর হতাশা। তবু বাঁচতে হবে, অন্যকে বাঁচার সুযোগ দিতে হবে। দৃঢ় পায়ে এগিয়ে যেতে হবে। জীবনে বাধাবিপত্তি, অশান্তি, সংঘাত, মহামারি আসবেই। হয়তোবা আজ, নয়তো কাল বা অন্য কোনো দিন। তবে তার প্রতিকারও আছে। মানবজীবনকে ভালো রাখার জন্য, সুন্দর রাখার জন্য আমাদের কিছু করণীয় আছে।

বিপদ দেখে ভয় পেলে হবে না। বিপদকে মোকাবিলা করে কীভাবে সবাইকে নিয়ে সুস্থভাবে বেঁচে থাকা যায়, আমাদের এখন সেই ভাবনাই সবার আগে ভাবতে হবে। পৃথিবী যেন আবারও দুলে উঠছে, কেঁপে উঠছে। আশা হারালে চলবে না, সাহস হারালে চলবে না। বরং আমাদের সমস্ত নিয়ম মেনে, বুকে সাহস নিয়ে আশা নিয়ে এ করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলা করতে হবে।
জীবন কখনো একভাবে যায় না। জীবনে আছে উত্থান-পতন, জরাজীর্ণ, শোক–তাপ, আশা-নিরাশা-ভরসা। আছে আনন্দ-বেদনা, প্রেম-ভালোবাসা। আর এটাই তো জীবন। আমরা এখন এক কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। শুধু সচেতনতা আর সাবধানতাই পারে আমাদের এই মহামারি থেকে রক্ষা করতে।

যে কঠিন সময় এসেছে, এ সময়ে আমাদের সবাইকে যথাযথভাবে সমস্ত নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। অযথা অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে না যাওয়াই উত্তম। কেননা, এ করোনা রোগটা অতি দ্রুত একজন থেকে আরেকজনে ছড়িয়ে পড়ে। কাজেই আমাদের সবাইকে সাবধান থাকতে হবে।

  • আশার কথা হচ্ছে টিকা এখন আমাদের হাতে চলে এসেছে। আমাদের সবাইকে টিকা নিতে হবে এবং সবাইকে সমস্ত নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেমন: প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হলে অবশ্যই সঠিকভাবে মাস্ক পরতে হবে এবং শারীরিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। হাঁচি-কাশি এলে দূরে সরে গিয়ে টিস্যু বা রুমাল বা কোনো কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে দিতে হবে। ব্যবহৃত টিসু বা কাপড় যেখানে–সেখানে না ফেলে ঢাকনাযুক্ত ময়লা রাখার জায়গায় ফেলতে হবে। সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কেননা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইমানের অঙ্গ।

  • সাবান–পানি দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে অথবা হাতে স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। হাত অযথা নাকে–মুখে নেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।আমাদের সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। সেই সঙ্গে পুষ্টিকর ও ভিটামিন সি–যুক্ত খাবার খেতে হবে।

  • ভয় হয়, বড় ভয় হয়। কখন যে কার ডাক আসে! কে যে কখন চলে যায়। কারও মৃত্যুর সংবাদ পেলে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে যায়। কত কথা যে মনে আসে। এক অজানা আতঙ্কে সর্বদা উদ্বিগ্ন থাকতে হয়। কোনো আপনজন, আত্মীয়, বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষী কখন যে কে চলে যায়, কার দুঃসংবাদ যে আসে, মনের মধ্য সব সময় এ ভয় কাজ করে।
    তবু বাঁচতে হবে, আশা থাকতে হবে। সংগ্রাম করতে হবে। বিপদে মনোবল হারালে চলবে না। সাহসের সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। সামনে এগিয়ে যেতে হবে। পৃথিবী আবার শান্ত হয়ে যাবে। কলকাকলিতে কর্মমুখর হয়ে উঠবে। ফুল ফুটবে, পাখিরা মনের আনন্দে গান করবে। আমি হাসব, তুমি হাসবে। আমরা সবাই আবার একসঙ্গে সুন্দরভাবে পৃথিবীটাকে মনের মতো করে সাজাব—এ স্বপ্নই প্রতিনিয়ত দেখছি।

লেখক : শিক্ষিক ও লেখক