জনতার কামরানহীন সিলেটের এক বছর

বদরউদ্দিন আহমদ কামরান
ফাইল ছবি

১৫ জুন সিলেটবাসীর জন্য সবচেয়ে বেদনাদায়ক দিন। কারণ, এ দিনই সিলেট হারিয়েছে তার সবচেয়ে আপন মানুষকে। যে মানুষের নামের সঙ্গে সিলেট প্রতিশব্দের মতো! যাঁর নাম বদরউদ্দিন আহমদ কামরান।

গেল বছরের ১৫ জুন ভোরবেলা একটি দুঃসংবাদ শুনে ঘুম ভাঙে সিলেটের প্রত্যেক মানুষের। ঢাকা থেকে খবর আসে, কামরান আর নেই।

সিলেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা, ‘জনতার কামরান’খ্যাত বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে এদিন কেড়ে নেয় বিশ্ব কাঁপানো করোনাভাইরাস। আজ তাঁর মৃত্যুর এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। মৃত্যুর এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো সিলেটবাসীর হৃদয়ে রয়ে গেছেন তিনি। কামরানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কয়েক দিন ধরেই নগরীতে নানা কর্মসূচি পালন করছেন তাঁর অনুসারীরা।

বদরউদ্দিন আহমদ কামরান

গত বছরের ৫ জুন সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় ৬৯ বছর বয়সী কামরানের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। তার আগে ২৭ মে তাঁর স্ত্রী আসমা কামরান কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত হন।

শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ৭ জুন কামরানকে ঢাকায় নিয়ে এসে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁকে প্লাজমা থেরাপিও দেওয়া হয়েছিল।
সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ জুন ভোরে মারা যান সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র কামরান, যিনি দীর্ঘদিন সিলেট পৌরসভার চেয়ারম্যানেরও দায়িত্বে ছিলেন।

একনজরে কামরান

বদরউদ্দিন আহমদ কামরান ১৯৫১ সালের ১ জানুয়ারি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময় ১৯৭৩ সালে তিনি প্রথমবার সিলেট পৌরসভার ওয়ার্ড কমিশনার নির্বাচিত হন। ১৯৯৫ সালে হন সিলেট পৌরসভার চেয়ারম্যান।

২০০২ সালে সিলেট পৌরসভা সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর কামরান মেয়র মনোনীত হন। ২০০৩ সালে সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে জিতে মেয়র পদ ধরে রাখেন তিনি। ২০০৭-০৮ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আরও অনেক রাজনীতিবিদের মতো কামরানকেও গ্রেপ্তার করা হয়। সে সময় জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা কামরান কারাগারে থেকে নির্বাচন করেও বিপুল ভোটে জয়ী হন।
২০১৩ সালের নির্বাচনে আরিফুল হক চৌধুরীর কাছে হেরে গিয়ে মেয়র পদ হারান কামরান। এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তিনি লড়েছিলেন, কিন্তু জয়ী হতে পারেননি।

১৯৮৯ সাল থেকে সিলেট শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০০২ সালে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি হন কামরান। সেই দায়িত্ব তিনি সামলেছেন প্রায় দেড় যুগ। ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদ পাওয়া কামরান মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত একই পদে ছিলেন।