করোনাকালীন ছাত্রজীবন কেমন হওয়া উচিত

গেল বছরের ১৮ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের জন্য সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। গ্রীষ্মকাল, ঈদ, পুজো ও শীতকালীন ছুটির জন্য কতই না অপেক্ষা করত শিক্ষার্থীরা। এই অল্প কয়েক দিনের ছুটিগুলোও কতই–না শান্তির ছিল! অথচ করোনাকালীন এত বড় ছুটিকেও কেউ বিন্দুমাত্র উপভোগ করতে পারেনি। মহামারি করোনাভাইরাস সব আনন্দ মাটি করে পেরিয়ে গেল ২০২০ সাল। মার্চের পর থেকেই অনিশ্চিত ছিল কবে প্রতিষ্ঠান খুলবে। সবার ধারণা ছিল, এই তো সামনে খুলছে, কিন্তু এভাবে পেছাতে পেছাতে আজ এত দিন। তাই অনেকেই সময়টা কাজে লাগাতে পারেনি। আবার কেউ কেউ বুদ্ধিমানের মতো সময়টা খুব ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছে। করোনাভাইরাসের কোড পরিবর্তন হয়েছে। করোনার টিকা কবে আসবে, আর তা শিক্ষার্থীদেরই–বা দেওয়া হবে কবে, কোনো কিছুরই নিশ্চয়তা নেই।

তাই আর না ভেবে সামনের সময়টুকু কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তা নিয়ে চিন্তা করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। এ সময়ে শারীরিক নিরাপত্তার কারণে কারোরই বাড়ির বাইরে যাওয়া হয় না। তা–ও বাড়িতে থেকেই যেসব করা যায়—

নিয়মিত শরীরচর্চা ও মেডিটেশন করা
বাসায় বসেই ইউটিউব দেখে ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম করার মাধ্যমে নিজেকে সুস্থ-সমৃদ্ধ রাখা যায়। মানসিক প্রশান্তির জন্য নিয়মিত নির্দিষ্ট একটা সময়ে মেডিটেশন করা যায়।

অবসরের শ্রেষ্ঠ সঙ্গী বই
এ সময়ে সারা দিন বাসায় বসে বিরক্ত হওয়ার চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়া বা গেম খেলে অযৌক্তিকভাবে সময় নষ্ট না করে ভালো কিছু কবিতা, উপন্যাস, গল্প, থ্রিলার বা গোয়েন্দা গল্পের বই পড়ে নিজেকে একটা চমৎকার মুহূর্ত উপহার দেওয়া যায়।

পরিবারকে সময় দেওয়া
আমরা স্বাভাবিক সময়ে এতটা সময় বাসায় থাকতে পারি না। তাই এ সময়ের সুবাদে গড়ে উঠুক সবাইকে নিয়ে এক সুন্দর মুহূর্ত। একে অপরকে আরও ভালো করে জানুক।

নিজেকে জানা
আমরা নানা ব্যস্ততার কারণে সত্যি বলতে কারোরই নিজেকে ঠিক ভালো করে জানা হয় না। আমি কী চাই, আমি কী ভালো পারি, আমার আগ্রহ আসলে সবচেয়ে বেশি কিসে, আরও কত কী! এ সময়ে নিজের ভালো দিকগুলো বের করে সেগুলোকে আরও শাণিত করে কাজে লাগানো যায় আর বাজে অভ্যাসগুলো ধীরে ধীরে বর্জন করা যায়।

নিয়মিত পড়া
অনলাইন ক্লাসের সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত পড়াশোনাও চালিয়ে যেতে হবে। এভাবে প্রতিষ্ঠান খোলার অপেক্ষায় বসে থাকলে শিক্ষাজীবনে ঝরে পড়া ছাড়া আর কিছুই হবে না। তাই নিয়ম করে সময় ভাগ করে তৈরি রুটিন অনুযায়ী চলতে হবে। এভাবে পড়ার চাপও অনেক কমিয়ে আনা যায়।

পাঠ্যক্রমবহির্ভূত কার্যক্রম
কেউ ভালো গান গায়, কেউ আবার খুব সুন্দর লেখে, কেউ আবৃত্তি করে, কেউ অভিনয়, কেউ নাচে, কেউ আবার ভিন্ন কিছু বানাতে পছন্দ করে, আরও কত কী! সাহিত্য-সংস্কৃতি আর এসব কার্যক্রমের সঙ্গে নিজেকে ভালো করে জড়ানোর একটা উপযুক্ত সময় এটি। এভাবে দক্ষ ও সমৃদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে উন্নত করা যায়।

লেখক: আলতাফ কবির নিলয়, শিক্ষার্থী, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ
ঠিকানা: ২২/এ ইন্দিরা রোড, ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫
ই–মেইল: [email protected]